আমিরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: যমুনা, ফুলজোড়, হুরাসাগর-সহ ছোট বড় বিভিন্ন নদী এবং চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ, এনায়েতপুর, তাড়াশ, উল্লাপাড়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলে টানা বর্ষণে প্রতিদিন নতুন নতুন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে জীবন-জীবিকার জন্য অভাবী মানুষেরা এ সময় বেছে নিয়েছেন মাছ ধরার পেশা। মাছ ধরার ধিয়াল বিক্রির ধুম পড়েছে। কেউ কেউ আবার স্থানীয় ভাষায় এগুলোকে খলসুনি, ধুন্দী,ধারকী বা চাঁই বলে থাকে। তবে যে যা নামেই ডাকুক না কেন মাছ ধরার সেই যন্ত্র তৈরির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের অনেক মানুষ। বাঁশ দিয়ে তৈরি করে বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করছেন।
এ অঞ্চলের তৈরি ধিয়াল ধারকি বা খলসুনি সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন হাট বাজারে পাইকারি ও খুচরা ক্রয়-বিক্রয় করা হচ্ছে। উল্লাপাড়া উপজেলার প্রতাপ হাটের ধিয়াল ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম জানান, তাদের দাদার আমল থেকেই তারা এ কাজের সঙ্গে জড়িত। অনেকে নতুন করে আসছে এ পেশায়। তাই দিন দিন এর সঙ্গে মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়ছেই। প্রতাপ গ্রামের মুসলিম আলী জানান, তার গ্রামের প্রায় আড়াইশ’ পরিবার এ ধিয়াল তৈরির কাজে জড়িত। এসব ধিয়াল আকারভেদে প্রতি জোড়ার দাম ৫০০ টাকা। কখনও কখনও এর চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হয়। আকারের ওপর নির্ভর করে নির্ধারণ করা হয় এর দাম। এক জোড়া ধিয়াল তৈরিতে সময় লেগে যায় প্রায় দু’তিন দিন। উপকরণ বাবদ খরচ হয় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।
তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ হাটে বিক্রি করতে আসা ব্যবসায়ী সালাম মন্ডল বলেন, হাটের ইজারাদাররা খাজনা বেশি নেয়ায় ক্রেতা, বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ইজারাদারদের মাঝে মধ্যেই ঝগড়া বেঁধে যায়। ধিয়াল কিনতে আসা বেল্লাল হোসেন জানান, এ বছর চলনবিলে পানি আসতে শুরু করেছে। প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকাসহ চলনবিলের মাঠ পানিতে ডুবে যাচ্ছে। ক্ষেতে কাজ নেই, তাই খেটে খাওয়া মানুষগুলো বর্ষার পানিতে মাছ ধরার জন্য ধিয়াল ক্রয় করছে। তারা এ ধিয়াল দিয়ে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে তা দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তাই এ মৌসুমে ধিয়ালের চাহিদা দিনদিন বেড়েই চলছে।